Nafijul Munna's Reviews > হাঙর নদী গ্রেনেড
হাঙর নদী গ্রেনেড
by
by
বই : হাঙর নদী গ্রেনেড
লেখিকা : সেলিনা হোসেন
মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি নিয়ে রচিত এক অসাধারণ উপন্যাস হাঙর নদী গ্রেনেড। নির্দিষ্ট ছকে বাঁধা অপরিবর্তনীয় গ্রাম্য জীবনে বুড়ি নামক চরিত্রের মাধ্যমে গল্প প্রবাহিত হচ্ছিলো।গল্পের বিশেষ দিক ছিলো, পারিবারিক কথপোকথন এর মাঝে হঠাৎ মুক্তিযুদ্ধের আগমন সাথে চারিত্রিক পরিবর্তন গুলো লক্ষনীয় ছিলো।
বারো ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট মেয়ে বলে বাবা আদর করে নাম রেখেছিলো বুড়ি, এই বুড়ি চরিত্রের রুপান্তর ও বিস্তৃত দেখা যায় উপন্যাসটিতে।
বুড়ির বাল্যকালের চাঞ্চলতা, উদাসীন মনোভাব, কিশোর বয়সে বিপত্নীক চাচাতো ভাই গফুরকে বিবাহ, খেলার সাথী সলীম কলীম সম্পর্কে হয়ে গেলো মা। এভাবেই শুরু হয় উপন্যাসের সাংসারিক, পারিবারিক কথপোকথন।
অতঃপর নানা প্রতিক���লতা নিয়ে গফুরের সাথে বিবাহের অষ্টম বছরে জন্ম নেয় গল্পের মহানায়ক রইস তথা বুড়ির নিজের সন্তান। সন্তানের মুখ দেখার পর বুড়ির সুখের খাঁচাটি বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হলো না, দু-চারটে ছেলেমেয়ের মতো রইস স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছিলো না। বুড়ির কত সাধের আকাঙ্ক্ষার ছেলেটি হলো শেষমেষ বোবা-কালা বোধহীন। বুড়ির এতো বছরের আকাঙ্ক্ষা, আর্তনাদে পরিণত হলো। সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় মায়ের বেদনার পাহাড় যে কত বড় সেটা এই উপন্যাস একটি বাস্তব প্রমাণ।
এরকম একটি সাংসারিক গল্প হঠাৎই পরিণত হয় মুক্তিযুদ্ধে।বুড়ি এক লাফে বয়স্ক হয়ে যায়। বিপত্নীক স্বামী গফুর আর পৃথিবীর আলোয় আলোকিত নেই, বুড়ির বুকের সবুজ বন হলদে করে স্মৃতির কৌটায় পরিণত হয় গফুর। বড় ছেলে সলীম ধরে সংসারের হাল, সাথে কলীমও।
এখানে লেখিকা সেলিনা হোসেন প্রশংসার দাবিদার,
পরিবারের উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে গল্প এমনভাবে প্রবাহিত হচ্ছিলো যে, আমার মতো নবীন পাঠক ধরেই নিবেন এটা পরিবারভুক্ত কোনো উপন্যাস। কিন্তু লেখিকা সেলিনা হোসেন অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দিত ভাবে পাঠক মনোযোগ ধরে রেখে জাদুকরী লেখনীর ছলে এক বেদনার রুপকথা টেনেছে সত্যিই আমি অবাক!! আসলে সাহিত্যিকদের চিন্তাধারার তুলনা হয় না!!
উপন্যাসে তুলে ধরা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ সমসাময়িক সময়ের ত্যাগ-তিতিক্ষা, এদেশের মানুষের অসহায়ত্ব। তুলে ধরা হয়েছে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরামহীন অত্যাচারের কালোরেখা।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাড়িতে আশ্রয় নেয়া দুই মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচাতে নিজের হাবা-বোবা-কালা সন্তানকে বিসর্জন দিয়ে মায়ের ব্যাকুলতা ভরা কান্না আমাকে নাড়িয়ে তুলেছিলো। দেশকে রক্ষা ��রতে এরকম মা-বোনদের ত্যাগ ও বিসর্জন ভাষায় প্রকাশ করা কষ্টসাধ্য। তাদের এসকল ত্যাগই আজ জাতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। মুক্তিযোদ্ধারা হয়তো নিজেদের জীবন ত্যাগ করেছেন, তাদের চেয়েও বড় ত্যাগের গল্প রচনা করে গেছেন বাংলার শত মা-বোনেরা।
বইয়ের শেষ কয়েক পাতা আপনাকে নাড়িয়ে তুলবে, দেশপ্রেমে আপনার মাথা নত হবে, আপনি অশ্রুসিক্ত হতে বাধ্য হবেন।
এই বইটি নিয়ে চলচিত্রও নির্মিত হয়েছে।
লেখিকা : সেলিনা হোসেন
মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি নিয়ে রচিত এক অসাধারণ উপন্যাস হাঙর নদী গ্রেনেড। নির্দিষ্ট ছকে বাঁধা অপরিবর্তনীয় গ্রাম্য জীবনে বুড়ি নামক চরিত্রের মাধ্যমে গল্প প্রবাহিত হচ্ছিলো।গল্পের বিশেষ দিক ছিলো, পারিবারিক কথপোকথন এর মাঝে হঠাৎ মুক্তিযুদ্ধের আগমন সাথে চারিত্রিক পরিবর্তন গুলো লক্ষনীয় ছিলো।
বারো ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট মেয়ে বলে বাবা আদর করে নাম রেখেছিলো বুড়ি, এই বুড়ি চরিত্রের রুপান্তর ও বিস্তৃত দেখা যায় উপন্যাসটিতে।
বুড়ির বাল্যকালের চাঞ্চলতা, উদাসীন মনোভাব, কিশোর বয়সে বিপত্নীক চাচাতো ভাই গফুরকে বিবাহ, খেলার সাথী সলীম কলীম সম্পর্কে হয়ে গেলো মা। এভাবেই শুরু হয় উপন্যাসের সাংসারিক, পারিবারিক কথপোকথন।
অতঃপর নানা প্রতিক���লতা নিয়ে গফুরের সাথে বিবাহের অষ্টম বছরে জন্ম নেয় গল্পের মহানায়ক রইস তথা বুড়ির নিজের সন্তান। সন্তানের মুখ দেখার পর বুড়ির সুখের খাঁচাটি বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হলো না, দু-চারটে ছেলেমেয়ের মতো রইস স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছিলো না। বুড়ির কত সাধের আকাঙ্ক্ষার ছেলেটি হলো শেষমেষ বোবা-কালা বোধহীন। বুড়ির এতো বছরের আকাঙ্ক্ষা, আর্তনাদে পরিণত হলো। সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় মায়ের বেদনার পাহাড় যে কত বড় সেটা এই উপন্যাস একটি বাস্তব প্রমাণ।
এরকম একটি সাংসারিক গল্প হঠাৎই পরিণত হয় মুক্তিযুদ্ধে।বুড়ি এক লাফে বয়স্ক হয়ে যায়। বিপত্নীক স্বামী গফুর আর পৃথিবীর আলোয় আলোকিত নেই, বুড়ির বুকের সবুজ বন হলদে করে স্মৃতির কৌটায় পরিণত হয় গফুর। বড় ছেলে সলীম ধরে সংসারের হাল, সাথে কলীমও।
এখানে লেখিকা সেলিনা হোসেন প্রশংসার দাবিদার,
পরিবারের উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে গল্প এমনভাবে প্রবাহিত হচ্ছিলো যে, আমার মতো নবীন পাঠক ধরেই নিবেন এটা পরিবারভুক্ত কোনো উপন্যাস। কিন্তু লেখিকা সেলিনা হোসেন অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দিত ভাবে পাঠক মনোযোগ ধরে রেখে জাদুকরী লেখনীর ছলে এক বেদনার রুপকথা টেনেছে সত্যিই আমি অবাক!! আসলে সাহিত্যিকদের চিন্তাধারার তুলনা হয় না!!
উপন্যাসে তুলে ধরা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ সমসাময়িক সময়ের ত্যাগ-তিতিক্ষা, এদেশের মানুষের অসহায়ত্ব। তুলে ধরা হয়েছে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরামহীন অত্যাচারের কালোরেখা।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাড়িতে আশ্রয় নেয়া দুই মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচাতে নিজের হাবা-বোবা-কালা সন্তানকে বিসর্জন দিয়ে মায়ের ব্যাকুলতা ভরা কান্না আমাকে নাড়িয়ে তুলেছিলো। দেশকে রক্ষা ��রতে এরকম মা-বোনদের ত্যাগ ও বিসর্জন ভাষায় প্রকাশ করা কষ্টসাধ্য। তাদের এসকল ত্যাগই আজ জাতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। মুক্তিযোদ্ধারা হয়তো নিজেদের জীবন ত্যাগ করেছেন, তাদের চেয়েও বড় ত্যাগের গল্প রচনা করে গেছেন বাংলার শত মা-বোনেরা।
বইয়ের শেষ কয়েক পাতা আপনাকে নাড়িয়ে তুলবে, দেশপ্রেমে আপনার মাথা নত হবে, আপনি অশ্রুসিক্ত হতে বাধ্য হবেন।
এই বইটি নিয়ে চলচিত্রও নির্মিত হয়েছে।
Sign into Goodreads to see if any of your friends have read
হাঙর নদী গ্রেনেড.
Sign In »
Reading Progress
Finished Reading
July 28, 2020
– Shelved